সকল দ্বায় কেন সাধারণ জনগণের কাঁধে?


 মৃত্যু অবধারিত। প্রতিনিয়ত মানুষ মরছে রোগ–শোক বা দুর্ঘটনায়। মৃত্যু হচ্ছে রাস্তাঘাটে, হাসপাতালে কিংবা বাড়িতে বা যুদ্ধের ময়দানে।

সম্প্রতি করোনা ভাইরাসে জর্জরিত বাংলাদেশ, রোগীর বাড়তি চাপ ও সুরক্ষার প্রশ্নে – ডাক্তার,হাসপাতাল রোগীদের চিকিৎসা দিতে অনিহা প্রকাশ করে- যে কোন অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে গেলে শুরু হয়, ভলিবলের মত ছোড়াছোড়ী – এই হাসপাতাল থেকে ওই হাসপাতাল, শেষে –পথে বা গাড়িতেই মৃত্যু – তার উপর অন্যকোন উপসর্গ নিয়ে আসা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে বলা হয় আগে করোনা টেস্টের রিপোর্ট আনেন – এই রিপোর্ট আনতে ১০-১৫দিন – এর মাঝেই বিনা চিকিৎসায় যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু – অন্তত প্রাথমিক চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত,  প্রতিদিনের মিডিয়াতে একাধিক মর্মান্তিক অপমৃত্যুর খবর, কেউ হাসপাতালের বারান্দায়, কেউ সড়কে, কেউ রিক্সায়, এইদিকে দালাল চক্র মানুষের এই নির্মম কষ্টের দিনে তাদের থেকে বিভিন্ন ভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
১৭ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ‘একটা কিডনি রেখে দিয়ে করোনার টেস্ট করাই দিয়েন। তিন-চার মাস ধরে কামাই বন্ধ’- বেসরকারি হাসপাতালের করোনাভাইরাস পরীক্ষার বাড়তি ফি নিয়ে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাঈম হাসান নীল নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক তরুণ। অভি্যোগ রয়েছে, সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে রোগীদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বেসরকারি হাসপাতালে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ক্ষেত্রে সরকার সাড়ে ৩ হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের কাছ থেকে কালেকশন ফি হিসেবে আরও ২০০ টাকা করে নিচ্ছে। (সংবাদের লিংক )

১ মে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কোনাবাড়ি থানা এলাকার সেন্ট্রাল মেডিকেল হাসপাতালে এ গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুরের এনায়েতপুর এলাকার বাসিন্দা স্বামী শরীফ হোসেন জানান, গত ২১ এপ্রিল তার স্ত্রী কেয়া আক্তারকে কোনাবাড়ির সেন্ট্রাল মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই সিজারের মাধ্যমে ছেলে সন্তান প্রসব করেন তিনি। শুক্রবার (১ মে) তাদের হাসপাতাল থেকে ফেরার কথা ছিলো। সেদিন তারা জানতে পারেন হাসপাতালের বিল ৪৭ হাজার টাকা এসেছে। এর মধ্যে তারা ২২ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু বাকি টাকা তাদের কাছে ছিলো না। তাই বাধ্য হয়ে ২৫ হাজার টাকায় নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করে, সেই টাকায় হাসপাতালের বিল মিটিয়ে বাড়ি ফিরে যান।

৪মে সিলেট নগরীর ৭টি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন এক বৃদ্ধা (৭০)। মৃত ওই নারী স্ট্রোক করেছিলেন, তার আইসিইউ সেবা প্রয়োজন ছিল। পরিবারের অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শ্রীমঙ্গল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে সিলেটে এসে তাকে নিয়ে একের পর এক হাসপাতাল ঘুরতে হয়েছে। তবুও কোনো হাসপাতালই রোগীকে ভর্তি করেনি।
ছবিতে (১) শনিবার (৯ মে) রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় ঢাকা ক্লাবের সামনের সড়কে রাকিবুল নামে এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে করোনাভাইরাস আতঙ্কে যেখানে কেউ সামনে গিয়ে তাকে সাহায্য করার সাহস করছিল না, সেখানে মুহূর্তেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় পুলিশের এক কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম,পিপিএম। তার উদ্যোগে দুইজন পথচারী ও পুলিশের পরিদর্শক মোঃ দিদার হোসেনের সহযোগিতায় তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয় রাকিবুলকে। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নেয়া হলে সেখান থেকে জানানো হয় করোনা ভাইরাসের রোগী ছাড়া তারা অন্য কোনো রোগী রাখেন না। এমন পরিস্থিতিতে মোঃ দিদার হোসেন সি.এন.জি করে রাকিবুলকে নিয়ে যায় অন্য আরেকটি হাসপাতালে।

ছবিতে (২) নারায়ণগঞ্জ জেলার ভুলতার ডিকেএমসি হসপিটালে গেল ৪ তারিখে রিয়া নামের এই নারীর ডেলিভারী হবার পরে গতকাল ২য় বারের মতো হাসপাতালে নিয়ে গেলে, ডিকেএমসি হসপিটাল রোগীকে কোরনাভাইরাসে সন্দেহে রোগীকে ভর্তি না করে, ঢাকা মেডিকেলে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। রোগীকে নিয়ে সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে টিকেট কাটার পর থেকে দীর্ঘ লাইনে এই লাইন সেই লাইন করতে করতে পরে চিকিৎসা নিতে না পারায় বেলা ১টা ৩০ মিনিটে রোগী নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়।

ছবিতে (৩) চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানা এলাকায় মঙ্গলবার (১৬) দুপুরে অটোরিকশার চাপায় আমার ছেলে গুরুতর আহত হয়। পরে আহত অবস্থায় বেশ কয়েকটি হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাঁকে কোনো হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়নি। এরপর চমেক হাসপাতালেও নেওয়া হলে সেখানকার কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ’‘হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে কত আকুতি মিনতি করেও আমার ছেলেকে বাঁচাতে পারলাম না। এর চেয়ে ব্যর্থতা ও আর কষ্ট আমার জন্য কি হতে পারে?

ছবিতে (৪) ১৬ জুন গাছ থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পান কুমিল্লার মেজবাহ উদ্দিন। মাথার ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি হতে পারেননি। চিকিৎসা পাওয়ার আশায় অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসেন তার স্ত্রী। চিকিৎসার জন্য যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু সেই ঢাকা মেডিকেলে এসেও কোনো লাভ হয়নি। তাকে ভর্তি করাতে পারেননি স্ত্রী। মেলেনি চিকিৎসাও। পরে অন্য কোনো হাসপাতালে আর চেষ্টা না করে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে আবারও ফিরে গেছেন নিজ বাড়ি কুমিল্লায়

ছবিতে (৫) ১৩ জুন শনিবারের। নিউমুনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়ায় শিশুটিকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিয়ে আসেন তার বাবা আব্দুল গফুর, কোলের শিশু ওয়ারিসা আহমেদের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় তার জন্য হাসপাতালে একটি আইসিইউ বেড দরকার ছিল। কিন্তু তাকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছোটাছুটি করার পরও কোনো আইসিইউ বেড মেলেনি। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা ছাড়াই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে দুই মাসের ছোট্ট শিশুটি।

সম্প্রতি খুলনায় রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ডাক্তার রাকিবের উপর হামলা হয় এবং ডাক্তার রাকিব মৃত্যুবরন করে, পুলিশ মুল আসামীসহ ৫জনকে গ্রেফতার করে, খুলনা অঞ্চল ডাক্তার রাকিবের হত্যার প্রতিবাদে ডাক্তাররা ধর্মঘট পালন করে প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে, বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে খুলনা মেডিকেল লাখ লাখ মানুষের ভরসা, জনগনের জীবন জিম্মি করে দাবি আদায়, এখানে জানাগনের কি অপরাধ কেন তাদেরকে প্রতিপক্ষ করা হচ্ছে, ডাক্তারদের ধর্মঘট এর ফলে যেসব মানুষ মারা যাবে এর দায় কার? কাদের বিরুদ্ধে অপমৃত্যু- হত্যা মামলা হবে?

সেন্টার ফর ইনজ্যুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি)-এর ‘ বাংলাদেশ হেলথ ইনজুরি সার্ভে-২০১৬ (বিএইচআইএস)’ শিরোনামে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়৷ প্রকল্পের পরিচালক ফারুক আহমেদ ভুইয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা দুর্ঘটনায় এবং আঘাতে মৃত্যু নিয়ে এই জরিপ চালিয়েছি৷ তাতে দেখা যায়, প্রতি বছর বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ১৬৬ জন নিহত হন৷ আর তাতে প্রতিদিন গড়ে নিহতের সংখ্যা ৬৪ জন৷” –  সাম্প্রতিক লকডাউন পরিস্থিতি থাকা গণপরিবহন বিহীন পরিস্থিতিতে, করোনার চেয়ে  সড়কে বেশি মৃত্যু- মার্চ-এপ্রিলে করোনায় মৃত্যু ১৬৮, সড়কে প্রাণ নিয়েছে ৫৬৫ ও মে মাসে সড়কে প্রাণ নিয়েছে ২৯২ জনের বেশি।
সড়কে এত মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার কিন্তু ঘাতকদের ধরা হয়না বিচার হয় না, সড়কের নৈরাজ্য বন্ধ করতে, হত্যাকাণ্ড রোধে ২০১৮ সালের “রমিজুদ্দিন শিক্ষার্থী দিয়া – করিম আন্দোলন” এর পর “সড়ক নিরাপত্তা আইন” করা হয় –৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ আইনটি সংসদে পাশ হয়। “সড়ক নিরাপত্তা আইন”  পরবর্তীতে নিরাপত্তা কথাটি বাদ দিয়ে “সড়ক পরিবহন আইন” নামকরন করা হয়, এই ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর ধারা ১ এর উপধারা (২) এ দেওয়া ক্ষমতাবলে সরকার ১ নভেম্বর ২০১৯ থেকে আইন কার্যকর হওয়ার তারিখ নির্ধারণ করে।’  কিন্তু আজো বাস্তবায়িত হয়নি, বাস্তবায়নের কথা উঠতেই, পরিবহণ ধর্মঘট – জিম্মি করা হয় জনগণকে – তারপর সড়কে কিছু সন্ত্রাসী নেমে অবাধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-ত্রাস- নৈরাজ্য প্রদর্শন – নারী পুরুষ শিশু বয়স্ক পথচারীদের মুখে পোড়া মবিল মেখে দেয়, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনের ছবি প্রকাশ্যে অবমাননা করে, অ্যাম্বুলেন্স এ রোগীবহন করতে বাধা দেয়,অ্যাম্বুলেন্সেই রোগী মারা যায়- স্থগিত হয় আইন।
উল্লেখ্য ২০১৭ পরিবহনের মালিকরা হঠাৎ করে ঢাকা শহরের সকল বাস সিটিং এর নাম করে করে দিয়ে জনগনকে ভোগান্তি র মধ্যে ফেলে, হঠাৎ করে মালিক রা মর্জি মাফিক বাস ভাড়া নিতে থাকে, শুরু হল অভিযান- শুরু হতেই অদৃশ্য চাপে ১৫দিনের জন্য স্থগিত হয়– যা আজো    ৩বছরেও স্থগিতই রয়ে গেল,  প্রত্রিকায় হ্যাড লাইন বের হয় পিছু হটলো সরকার,বৈধ হয়ে গেল লোকাল বাসে সিটিং ভাড়া।
গণ পরিবহণ তাদের মর্জি মাফিক টাকা নিচ্ছে জনগণ থেকে, আর মহামারীতে হটাত করে গনপরিবহন ভাড়া দ্বিগুণ- সরকার ৩১মে বাস ভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারী করেন– সকলেই ভুলেই গেলেন যে তারা ২০১৭ থেকে অবৈধভাবে লোকাল গাড়িতে সিটিং ভাড়া নিয়ে আসছে, সরকার সেই সময়ে- অভিজান স্থগিত রাখে- তার উপর আবার ডবল ভাড়া, মর্জি মাফিক ভাড়া, যেখানে মানুষ খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে – সেখানে গুটি কয়েক মালিকের স্বার্থ রক্ষায় গনপরিবহন ভাড়া বাড়ানো “মরার উপর খাঁড়ার ঘা”, “সাধারন মানুষের উপর জুলুম”- যেখানে  বিশ্বের মহামারীতে আক্রান্ত ২০০র অধিক দেশ  কেউ গনপরিবহন ভাড়া বাড়ায়নি।
সড়কে বিশেষত ঢাকার উত্তারাঞ্চলে কেউ সড়কে আহত হলে – পথচারী আহত মুমূর্ষু রোগীকে স্থানীয় “কুর্মিটোলা হাসপাতালে” নিলে ডাক্তাররা মুমূর্ষু রোগীকে ধরেও দেখেনা – কারন তারা ঝামেলা থেকে দূরে থাকতে চায় বা দায়িত্ব এড়ানো বা অমানবিকতা বা পুলিশি জিজ্ঞাসার ভয়ে– অথচ মুমূর্ষু রোগী ডাক্তারকে দেখলে মনে একটু সান্তনা পায়- ভরসা পায়- কিন্তু ডাক্তাররা প্রাথমিক চিকিৎসাও দেয় না, রোগী দেখেই বলে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যান – পথচারীদের কি দায় পড়েছে এক জন অপরিচিত মানুষকে নিয়ে টানাটানি করা, আর কোন পথচারী মুমূর্ষু রোগী নিয়ে ঢাকা মেডিক্যালে নিতে রাজি হলেও – ঢাকা শহরের জ্যামে কুর্মিটোলা হাসপাতালে থেকে ঢাকা মেডিকেল পৌঁছাতে ১ থেকে ২ ঘণ্টা লাগে – এর মধ্যে আহত রোগী – যন্ত্রণা – ভয় – নার্ভাস এর কারনে পথেই মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যুবরন করে – সেন্ট জসেফের শিক্ষার্থী আদনান তাসিন তার নির্মম শিকার।
সিআইপিআরবি’র নির্বাহী পরিচালক ডা. একেএম ফজলুর রহমান বলছেন দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে মৃত্যু, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই প্রাথমিক জরুরী সেবার অনুপস্থিতি এর প্রধান কারণ ।তিনি বলছিলেন, “ইমারজেন্সি মেডিকেল সার্ভিস বলতে আমরা যা বলি, উন্নত বিশ্ব যেটা ঘটে, যদি একটা দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে প্রথমেই একটা কল সেন্টারে ইনফর্ম করা হয়। এরপর প্রশিক্ষিত ম্যানপাওয়ার পাঠানো হয়। সেই টিম উদ্ধার করার পরে যেখানে দুর্ঘটনা ঘটে সেইখানেই একটা ব্যবস্থা হবে। হাসপাতালে যাওয়ার পথে যেটুকু চিকিৎসা দেয়া সম্ভব সেটা দিয়ে হাসপাতালে সঠিকভাবে ট্রান্সফার করা হয়। হাসপাতালে জরুরী বিভাগে লোক রেডি থাকে। তারা সেখানেই ইমারজেন্সি রুমে চিকিৎসা দেয়ার পরই যদি দরকার হয় তাহলে ইনডোরে ভর্তি করা হয়। কিন্তু আমাদের এখানে সমন্বিতভাবে এই তিনটা বিষয় গড়ে ওঠে নি।”

প্রথম শ্রেণী থেকে শুরু করে সকল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে, কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না, রোধ করা যাচ্ছে না অনেকেই বলেন রোধ করছেন না, সেই কারনে ২০১৮ সালের এস এস সি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে, সেই সময়ে শিক্ষা মন্ত্রী বলেছিলেন, প্রশ্নপত্র যতবার ফাঁস হবে ততবার আবার পরীক্ষা নেয়া হবে, কথাটা শুনে অনেক ছাত্ররা পরীক্ষার প্রতি আগ্ৰহ হারিয়েছে, এক অভিভাবক আকাম করবে তারা আর প্রায়শ্চিত্ত করবে নিরীহ ছাত্রছাত্রীরা

ব্যবসায়িদের হাতে জিম্মি সাধারণ মানুষ, বিনা কারনে হঠাৎ করে পেয়াজের দাম হয়ে গিয়েছিলো ৩৪০ টাকা, চালের ভরা মৌসমে চালের দাম বাড়ে, বাজারে জিনিস পত্রের দাম তাদের মর্জি মাফিক, মানুষ বাধ্য তাদের মর্জি মাফিক দামে জিনিসপত্র কিনতে, উৎসব মহামারি হলে ব্যবসায়িরা খুশী – মর্জি মাফিক দামে জিনিস বিক্রি করতে পারে, একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলেন চালের দাম বৃদ্ধির ফলে নতুন করে ৫ লাখ ২০ হাজার লোক নতুন করে দরিদ্র হয়েছে, প্রতিটি জিনিস পত্রর দাম ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে ১৪% মানুষের ঘরে খাবার নাই। ব্যবসায়িরা করোনা মহামারীর সময়ে জীবন বাঁচানোর অক্সিজেন স্টক করে ১০ গুন ২০ গুন দাম হাঁকে – ধরা পরলেও তাদের সাজা হয়না – শুধু কিছু জরিমানা।

বাজেটে করের বোঝা ব্যবসায়িরা জনগণের কাধে তুলে দেয়, সিটি কর্পোরেশন ট্যাক্স, ইনকাম ট্যাক্স, ভেট, সারচার্জ, কর, সম্পূরক কর, এখন ১০০ টাকায় মোবাইল বিলে ৩৩.২৫ টাকা কাটা হবে, করোনায় সাবান, লবন বেশি উপকারী তাই বাজেটে এর দাম বেড়েছে, বাজেটে চাল, চিনি, মাস্ক সহ যে সব পন্যের দাম কমেছে – বাজারে সেই সব জিনেসের দামও বেড়েছে বা স্থিতিশিল।

ঢাকার বাড়ি ভাড়া এখন কোন নিয়োম নিতীর তোয়াক্কা না করে তাদের মর্জি মাফিক বেড়েই চলছে, কিছু বল্লে বলে বাড়ি ছেড়ে দিন, পানিতে থেকে কে কুমিরের সাথে তর্ক করবে, আর মাসে মাসে ভাড়া দিয়ে থাকলেও তারা কোন ভাড়টিয়ার সাথে ভালো ব্যবহার করে না, আর কোন কারনে মাসের ১০ তারিখের মধ্যে ভাড়া দিতে না পারলে, পরিবারের সদস্যদের সামনে অপমানিত হতে হয়, মহামারিতে মানুষের কাজ নেই – আয় রোজগার বন্ধ – তারপরো না খেয়ে হলেও মান বাঁচাতে বাড়িভাড়া দিতে হয়।
করোনা মহামারীতে কোটি মানুষের গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠান মালিকদেকে সরকার প্রণোদনার আওয়ায় আনেন – ঋণ মৌকুফের ঘোষণা- পোর্ট থেকে পণ্য খালাসের সুবিধা পান- কিন্তু অনেক মালিক ফরেনকারেন্সি যোদ্ধাদের কাজ থেকে বের করে দেয় – অনেকেই বকেয়া বেতন পায়নি, অনেকে ৫০%-৬০% বেতন পেয়েছে। এই মহামারীতে বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল থেকে শুরু করে সকল জিনিসের দাম বেড়েছে, এখন জীবন বাঁচানোই কষ্টসাধ্য। ঈদের পর দেশের ৬৭টি কারখানা থেকে ১৭ হাজার ৫৭৯ জন পোশাক শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতিকে (বিজিএমইএ) ছাঁটাই বন্ধে ব্যবস্থা নিতে দেয়া এক চিঠিতে এমন তথ্য জানিয়েছে সরকারের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই)।

সারা বছর কষ্ট করে কৃষক আলু বিক্রি করে ২ টাকায়  আর আমরা তা কিনি ২০/৩০ টাকায়, ব্যবসাষিদের বিনা কষ্টে কেজি প্রতি ১৮/২৮ টাকা লাভ,  বেগুন বিক্রি করে ৫ টাকায়  আর আমরা তা কিনি ৪৫/৫০ টাকায়, ব্যবসায়িদের বিনা কষ্টে কেজি প্রতি ৪০/৪৫ টাকা লাভ, বাজারে ৫০ টাকার নীচে কোন সবজী পাওয়া কষ্টকর, দেখার কেউ নাই  কৃষক প্রতিবছর জমি বেচে তারা বিলুপ্ত হচ্ছে আর ব্যবসায়িদের বাড়ি আর গাড়ি বাড়ছে আর চুইজব্যংকে টাকা রাখছেন, হারিয়ে যাচ্ছে কৃষক,

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি জুন ৮, ২০২০ বলেন,  ‘কোভিড-১৯ এর কারণে দ্ররিদ্র মানুষের বেহাল অবস্থা। লকডাউনের ৬৬ দিনে নবদরিদ্র ও অতি দরিদ্র সৃষ্টি হয়েছে ৫ কোটি ৯৫ লাখ বা প্রায় ৬ কোটি। শ্রেণি কাঠামোর ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। তবে লকডাউনে ১ কোটি ৭০ লাখ অতি ধনী শেণির কোনো পরিবর্তন হয়নি। ধনীরা আরও ধনী হয়েছেন। তবে আগের ৩ কোটি ৪০ লাখ উচ্চ মধ্যবিত্ত থেকে মধ্য মধ্যবিত্ত হয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ, ৩ কোটি ৪০ লাখ মধ্য মধ্যবিত্ত থেকে ১ কোটি ২ লাখ হয়েছে নিম্ন মধ্যবিত্ত, ৫ কোটি ১০ লাখ নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে ১ কোটি ১৯ লাখ দরিদ্র এবং তিন কোটি ৪০ লাখ দরিদ্র থেকে ২ কোটি ৫৫ লাখ অতি দরিদ্র হয়েছে। ৬৬ দিনে সব মিলিয়ে ৫ কোটি ৯৫ লাখ নতুন করে দরিদ্র ও অতি দরিদ্র হয়েছে।

আহসান উল্লাহ টুটুল-আহবায়ক
সড়কে স্বজনহারা অভিভাবক ফোরাম

Comments

Popular posts from this blog

সড়কে শিক্ষার্থী আদনান তাসিন হত্যার বিচার ও সড়কে নিরাপত্তার সহ ৫দফা দাবিতে মানববন্ধন

হায়না ঘাতকরা কেড়ে নিলো মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিনকে

শেওড়া বাসস্টান্ডে ফুটওভারব্রিজটি আদনান তাসিনের নাম অনুসারে “আদনান ফুটওভারব্রিজ"